Skip to main content
 

আমাদের কথা

নড়াইল আদালতের বিবর্তনের চিত্র

নড়িয়াল ফকির এর নড়াইল

বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও চিন্তাবিদদের  মধ্যে নড়াইলের নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত প্রচলিত আছেজনশ্রুতি আছে যে, নড়িয়াল ফকিরের আর্শিবাদপুষ্ট নড়ি হতে নড়াইল নামের উৎপত্তি হয়েছেনবাব আলিবর্দী খাঁ এর শাসনামলে তার এক কর্মচারী মদনগোপাল দত্ত নৌকা যোগে স্বপরিবারে কুড়িগ্রাম আসেনএখানে তিনি কচুরীর ধাপের উপর ধ্যানরত অবস্থায় একজন ফকিরকে দেখতে পানতিনি নড়িয়াল ফকিরমদনগোপাল দত্ত নত হয়ে তার আর্শিবাদ কামনা করেনফকির খুশি হয়ে তাকে তার হাতের নড়ি (লাঠি) উপহার দেন এবং ঐ এলাকা আবাদ করার নির্দেশ দেন ফকিরের আর্শবাদপুষ্ট হয়ে তিনি কুড়িগ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং ধীরে ধীরে ঐ এলাকা জনবসতিপূর্ণ হয়নড়িয়াল ফকিরের আর্শীবাদপুষ্ট তাই নাম হয় নড়িয়ালপরবর্তীতে লোকমুখে বিকৃত হতে হতে নড়িয়াল থেকে নড়াইল  নামের  উৎপত্তি  হয়েছে 

নীল বিদ্রোহ ও নড়াইল মহকুমা

১৮৬১ সালে নীল বিদ্রোহের সময় নড়াইল একটি পৃথক মহকুমা স্থাপিত হয়মহকুমা সদরের স্থান নির্বাচনের জন্য মহিষখোলা মৌজার নড়াইল মহকুমার সদরকেই বেছে নেয়া হয়প্রকৃত নড়াইল মৌজা শহর হতে ৩ কিলোমিটার দূরে যেখানে নড়াইলের জমিদারদের প্রসাদ অবস্থিত ছিলো এবং অপরদিকে মহকুমা প্রশাসকের বাসভবনই নীলকরদের কুঠিবাড়ী ছিল১৯৩৯ সালের তথ্যে জানা যায় যে, সাবেক যশোরের পাঁচটি মহকুমার পূবাঞ্চলের একটি সমৃদ্ধশালী মহকুমা ছিল নড়াইল১৯৩৫ সালে সীমানা পূর্ণগঠনের প্রেক্ষিতে বিদালী, পোড়ালী ও শেখহাটি ইউনিয়নকে নড়াইল থানার সাথে এবং পোড়লী ইউনিয়নকে কালিয়া থানার সাথে সংযুক্ত করা হয় ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর লোহাগড়া, কালিয়া, আলফাডাঙ্গা ও নড়াইল এই চারটি থানা  নাড়াইল মহকুমা অবশিষ্ট থাকে১৯৬০ সালে আবার আলফাডাঙ্গা নাড়াইল হতে বিছিন্ন করে ফরিদপুরের সঙ্গে অন্তর্ভূক্ত করা হয়এইভাবে বিভিন্ন সময় নড়াইল এর ভৌগলিক সীমারেখা সংকুচিত করা হয়েছেবর্তমানে সদর, লোহাগড়া, কালিয়া ও নড়াগাতী এই ৪টি থানা নিয়ে নড়াইল জেলা গঠিতঅনেক সংগ্রাম, হরতাল, সমাবেশ ও অনশন ধর্মঘটের ফলশ্রুতিতে ১৯৮৪ সালের ১লা জুলাই নড়াইলকে পূণাঙ্গ জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বর্তমানে নড়াইল একটি জেলা শহরএই জেলার উত্তরে মাগুরা জেলার শালিখা ও মহম্মদপুর থানা, দক্ষিণে খুলনা জেলার তেরখাদা, দীঘলিয়া, বাগেরহাট জেলার মোল্লার হাট, পূর্বে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ এবং পশ্চিমে যশোর জেলার অভয়নগর, বাঘারপাড়া ও কোতয়ালী থানা অবস্থিত

নড়াইল আদালত এর ইতিকথাঃ

গোলপাতার মুন্সেফ আদালত

১৮৬১ সালে নড়াইল মহকুমা প্রতিষ্ঠার পর থেকে যে সকল আইনজীবী গোলপাতার মুন্সেফ আদালতে কাজ করেছেন তার কোন তথ্য সঠিকভাবে সন্নিবেশিত হয়নি এবং এই সংক্রান্ত কোন লিখিত রেকর্ড নেই। উপরন্ত মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নড়াইল জেলার অধিকাংশ বিজ্ঞ আইনজীবী মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ সংগঠক হিসেবে কাজ করায় পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর রোষানলে আইনজীবী সমিতির অধিকাংশ রেকর্ড ও পুরোনো নথি পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় ও কিছু চিত্রা নদীতে ফেলে দেওয়ায় লিখিত কোন তথ্য রাখা সম্ভব হয়নি।

যশোর জেলায় পূর্ব প্রান্তে গোলপাতার ঘরে নড়াইল মুন্সেফ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে অভয়নগর, আলফাডাঙ্গা, বাঘারপাড়ার কিছু অংশ ছিল। পরবর্তীতে অভয়নগর, বাঘারপাড়ার কিছু অংশ যশোর চলে যায়। আলাফাডাঙ্গা ফরিদপুরে সংযুক্ত হয়নড়াইল থেকে বিজ্ঞ আইনজীবী সেখানে গিয়ে শুনানীতে অংশগ্রহণ করতেন।

গোলপাতার মুন্সেফ আদালত থেকে লাল দালানঃ

বর্তমান জেলা জজ আদালত যেখানে অবস্থিত সেখানে বিরাট একটি বড় বট গাছ ছিল। যা ১৯৭১ সালের ০৬ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর ছোঁড়া বোমার আঘাতে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঐ পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া অংশের পাশ দিয়ে নতুন করে কান্ড ও ডাল গজায়। বর্তমান জেলা জজ আদালতের পাশের ঐ বটগাছ এখনো পুড়ে যাওয়া ও নতুন গজানো কাণ্ড নিয়ে সগৌরবে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ ও নতুন দিনের বারতার প্রতীক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। 

সম্ভবত ১৯৩০ সালের দিকে নড়াইল জেলা জজ আদালতের বর্ধিত অংশ (যেখানে এখন কালিয়া সহকারী জজ, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত অবস্থিত) সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় লাল দালান আদালত। ঐ লাল দালান বর্তমান জেলা জজ আদালতের বর্ধিত অংশ থেকে শুরু হয়ে নড়াইল গার্লস স্কুল পার হয়ে চিত্রা নদীর কূল পর্যন্ত ছিল। অর্থাৎ বর্তমান জজ কোর্ট জামে মসজিদ থেকে নদীর পশ্চিম কিনার পর্যন্ত ছিল মুন্সেফ কোর্ট। উক্ত লাল দালানে সেকেন্ড ও থার্ড মুন্সেফ আদালত ছিল। ঐ আদালতের বিচারকগণের বাসভবন ছিল বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ বাংলো যেখানে অবস্থিত সে স্থানে। এরপর শেখ রেজওয়ান আলী সাব জজ হিসেবে নড়াইল মুন্সেফ আদালতে আসেন। নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় পূর্ব পর্যন্ত সেকেন্ড মুন্সেফ কোর্ট, থার্ড মুন্সেফ কোর্ট ও সাব জজ আদালত এটাই ছিল নড়াইল মুন্সেফ আদালত এর অর্গানোগ্রাম।

বর্তমান জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত এর অবস্থান সংলগ্ন এলাকায় ছিল পোস্ট অফিস (পোস্ট অফিসের অবস্থান এখনো আগের জায়গায় আছে)। তখন স্টিমার ঘাট ছিল পোস্ট অফিসের সাথে। পরে স্টিমার ঘাট সরে আসে বর্তমান বধ্যভূমি থেকে দক্ষিনে। গার্লস স্কুলের নদীর পাড়ে ছিল লঞ্চ ঘাট। বধ্যভূমির পাশে ওখানে আই ডব্লিউ টি (ইন ল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি) বর্তমান বি আই ডব্লিউ টি এর একটা পল্টুন ছিল। সেখানে যাত্রী ছাউনীতে লোক উঠা নামা করত। লঞ্চ খুলনা থেকে এসে নড়াইল হয়ে মাগুরা যেত। মামলার পক্ষরাও এই পথে নড়াইল আসত। বর্তমান জেলা জজ আদালত ভবনের পাশে যে বটগাছ ১৯৭১ সালের পাক হানাদার বাহিনীর ধ্বংসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে ছোট ছোট কিছু চা দোকান ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান ছিল। লঞ্চ ঘাট থেকে মানুষ এসে এখানেই চা খেত, গল্প করত। এই লঞ্চ ঘাটের কাছেই ১৯৭১ সালে নির্মম ভাবে স্বাধীনতাপ্রিয় নড়াইল বাসীকে হত্যা করা হয়েছিল।

লাল দালান থেকে জেলা জজ আদালত ভবন

১৯৮৫ সালে মাগুরা ও নড়াইল নিয় সেশন ডিভিশন হয়  ১৯৮৭ সালের ১লা জুলাই বিচারপতি নুরুল ইসলাম জেলা জজ আদালত ভবন উদ্বোধন করেন। তখন নড়াইল জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন জনাব কাজী গোলাম রসুল।  এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, আমাদের বাঙ্গালি জাতির জীবনে কালোতম এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল নড়াইল জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল এর হাত ধরে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে বিপথগামী সেনাদের হাতে নিহত হন৷ বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি আইন করা হয়। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বিচারের পথ সুগম করে। ওই বছরই বঙ্গবন্ধুর আবাসিক একান্ত সহকারী (পিএ) এএফএম মোহিতুল ইসলাম ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা করেন। নড়াইল জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ জনাব কাজী গোলাম রসুল ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে ১৯ আসামির ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠাঃ

১৮৬১ সালের দিকে যশোর গোলপাতার মুন্সেফ আদালতের যাত্রা শুরুকালে নড়াইল জেলা আইনজীবী সমিতির অবস্থান ছিল বর্তমান জেলা জজ আদালত ভবনের বর্ধিত অংশ সংলগ্ন। ১৯৮৪ সালের পহেলা মার্চ তারিখ নড়াইল মহকুমা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে বিচার ব্যাবস্থার জন্য পুরোনো মুন্সেফ ভবনকে জেলা জজ আদালত ভবন হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়। ১৯৯৩-১৯৯৫ অর্থ বছরে জেলা জজ আদালত নতুন ভাবে নির্মিত হয়। তখন আইনজীবী সমিতির শতাব্দী প্রাচীন ভবনটি জেলা জজ আদালতের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে পড়ে। এমতাবস্থায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব আলী হোসেন সরকারী জমি থেকে বার ভবন প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দেন। বর্তমান আইনজীবী ভবনটি উক্ত জমির উপর ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তখন নড়াইল আইনজীবী সমিতিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি এ্যাডভোকেট বাবু সুবাস চন্দ্র। 

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর ইতিহাসঃ

এসডিও (SDO) আদালত থেকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত

বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার জন্য ১৯৯৪ সালে একটি রিট মামলা করেছিলেন জেলা ও দায়রা জজ ও জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মাসদার হোসেন। সেই মামলাটি 'মাসদার হোসন মামলা' নামে পরিচিত, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে যার চূড়ান্ত রায় হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। রায়ের আট বছর পর ২০০৭ সালে মূল নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করে বিচার বিভাগকে আলাদা করা হয়েছিল। ঐ রায়ের বস্তবায়ন হলে অন্যান্য জেলার মত নড়াইল জেলায় ১লা নভেম্বর, ২০০৭ সালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়।

নড়াইল জেলায় অদ্যবধি পৃথকভাবে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর স্থাপনা গড়ে উঠেনি। ২০০৭ সালের পূর্বে বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের পাশে ছিল এসডিও (SDO) এর বিল্ডিং। সেখানে ২ টি আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাজ চলত। বর্তমান নির্বাচন অফিস থেকে দক্ষিন দিকে বর্তমান জি আরও অফিসে ছিল আরো একটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। ইলেকশন অফিস ছিল তখন মূল জেলখানা। ২০০৭ সালের পর থেকে এসডিও আদালতের বিল্ডংটাই বর্তমান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একাংশ হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে। ঠিক যে স্থানটিতে ২ টা এসডিও কোর্ট ছিল সেখানেই এখন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম ও ২য় আদালত এর অবস্থান। স্থান সংকুলান না হওয়ায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম ও ২য় আদালত এর অবস্থান বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নীচ তলা ও ২য় তলায়।

ইতিহাস কথা বলে

রক্তের সিঁড়ি নেমে গেছে আদালত এর কোল ঘেঁষে

১৯৭১ সালে পুরো খুলনা বিভাগ জুড়েই পাকবাহিনী নারকীয় হত্যাকান্ড, ধর্ষণ, নির্যাতন এর মতো জঘন্য অপরাধ করেছে। নড়াইল জেলার নদীগুলোতে গণহত্যার পর লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হত, পাড়েও ফেলে রাখা হত অসংখ্য লাশ। এই বধ্যভূমি পাকবাহিনী ও তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগী আলবদর-রাজাকারদের সৃষ্ট। নড়াইল জেলা জজ আদালতের ২৫ গজ দূরে ডাক অফিসের দ্বিতল বাড়ির পেছনে রয়েছে এই বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে অসংখ্য নারী-পুরুষকে ধরে এনে এই ক্যাম্পে নির্যাতন চালায় পাকবাহিনী নির্যাতন-ধর্ষণের পর ক্যাম্পের পেছনে দেয়াল ঘেরা জঙ্গলে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হত তাদের, কারো কারো পেট  ফেঁড়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হত। শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই সৌধ 

নড়াইল আদালতের ইতিহাস সৃষ্টিকারী আইনজীবীগণ

নড়াইল আদালতে বেশ কিছু বিখ্যাত আইনজীবীর পদচারণা ঘটেছে তাঁদের মধ্যে আতাউর রহমান, কুঞ্জ বিহারী বসু, খিতীশ ধর, সতীশ ধর, মুন্সী ওয়ালিয়ার রহমান, জনাব কালান্দার, মনীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, খন্দকার আব্দুল হাফিজ অন্যতম। তাঁদের মধ্যে খন্দকার আবদুল হাফিজ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তান-৭৩ আসন থেকে এমএনএ নির্বাচিত হনস্বধীনতা যুদ্ধে তিনি নড়াইলের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন ড্রাফটিং কমিটির সদস্য মনোনীত হন। নড়াইল আইনজীবী সমিতির সদস্যগনের মধ্যে এ্যাডভোকেট সাইদুজ্জামান, খন্দকার আব্দুল হাফিজ, মকবুল হোসেন, ওয়ালিউর রহমান, গাজী আলী করিম, ফজলুর রহমান জিন্নাহ, সিদ্দিক আহমেদ, আলমগীর সিদ্দিকীসহ আরো অনেক বিজ্ঞ আইনজীবী অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠা

২০২১ সালের আগ পর্যন্ত নড়াইল জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল এর জন্য আলাদা কোন বিজ্ঞ বিচারক ছিলেন না। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ সর্বপ্রথম নড়াইল জেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল এর জন্য স্বতন্ত্র বিচারক এর পদ সৃষ্টি করা হয় যা নড়াইল জেলার বিচারপ্রার্থী জনগণকে দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার প্রদানের পথ অনেক সুগম করেছে।

নড়াইল বিচার বিভাগের এগিয়ে চলা

গোলপাতার আদালত থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট আদালত

যে গোল পাতার আদালত থেকে যাত্রা শুরু করেছিল নড়াইল বিচার বিভাগ সেখানে এখন আছে আদালত চত্বর জুড়ে সিসিটিভি, ডিজিটাল কজলিস্ট, ডিজিটাল হাজিরা প্রদান কেন্দ্র, তথ্য কেন্দ্র, তথ্য কনিকা, শিশুদের জন্য ব্রেস্ট ফিডং কর্নারমহিলা বিচারপ্রার্থীসহ মহিলা কর্মকর্তাদের জন্য পৃথক ওয়াশ রুম। এই আদালতে এখন নিয়মিত বিরতিতে সকল স্টাফদের ইন হাউজ ট্রেনিং, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা প্রশিক্ষণ এর আয়োজন করা হয়। এছাড়াও স্টাফ ও অফিসারদের জন্য সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। বর্তমান সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে নড়াইল বিচার বিভাগ ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সমান তালে এগিয়ে চলছে। 

 

 

 

তথ্য সূত্রঃ

১। এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সিনিয়র আইনজীবী, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

২।এ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রশীদ এমরান, সিনিয়র আইনজীবী, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

৩। বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আলমগীর সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পিপি, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

৪। বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট ওমর ফারুখ, সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

৫। এ্যাডভোকেট শামসুদ্দাহারসিনিয়র আইনজীবী, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

৬। এ্যাডভোকেট সঞ্জীব কুমার বসু, অতিরিক্ত পিপি, জেলা আইনজীবী সমিতি, নড়াইল

৭। বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এ বাকী, প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, নড়াইল সদর

৮। লিজা হাসান,  সহকারি শিক্ষক, নন্দোকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

৯। জেলা আইনজীবী স্মরণিকা, ৯৫ 

১০। জেলা আইনজীবী স্মরণিকা ১৯০৩-২০০৩ 

 

সম্পাদনা

১। মোঃ এনামুল হক, সিনিয়র সহকারী জজ

২। আমাতুল মোর্শেদা, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

৩। হেলাল উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

৪। লিটন দাশ, সহকারী জজ